১. প্রাথমিক জীবন ও শিক্ষা
রাজা রামমোহন রায় ১৭৭২ সালের ২২শে মে, পশ্চিমবঙ্গের হুগলি জেলার রাধানগর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতা রামকান্ত রায় ছিলেন একজন ব্রাহ্মণ জমিদার এবং একজন সংস্কৃতজ্ঞ। মা ত্রিপুরাসুন্দরী দেবী ছিলেন ধর্মপরায়ণ ও ঐতিহ্যবাদী। এই দুই বিপরীতধর্মী প্রভাব রামমোহনের চিন্তাভাবনার উপর গভীর ছাপ ফেলেছিল।
ছোটবেলায়ই রামমোহন সংস্কৃত ও প্রথাগত হিন্দু শিক্ষা গ্রহণ করেন। তিনি বেদ, উপনিষদ, স্মৃতি, পুরাণ প্রভৃতি শাস্ত্র পাঠ করেন। কিন্তু শৈশবেই কিছু ধর্মীয় কুসংস্কার তাঁকে বিচলিত করেছিল। বিশেষ করে, দেবতা পূজার আড়ম্বর ও বৈষম্যমূলক আচরণ তাঁকে প্রশ্ন করতে বাধ্য করে।
রামমোহনের শিক্ষাজীবনের একটি বিস্ময়কর দিক হলো, তিনি একাধারে বহু ভাষায় দক্ষ ছিলেন। সংস্কৃত, বাংলা, ফারসি, আরবি এবং পরে ইংরেজি ভাষায় তাঁর দখল ছিল অসাধারণ। ফারসি ও আরবি শিখতে তিনি পাঠান যান পাটনায় এবং সেখানে ইসলাম ধর্ম ও সুফি দর্শনের প্রভাব পড়ে তাঁর উপর। এর ফলে তিনি একেশ্বরবাদের ধারণায় আকৃষ্ট হন।
পরে তিনি কাশিতে গিয়ে সংস্কৃত পড়েন, এবং শেষপর্যন্ত কলকাতায় এসে ইংরেজি, ল্যাটিন ও গ্রিক ভাষা শিখেন। পাশ্চাত্য বিজ্ঞান, দর্শন ও যুক্তিবাদ তাঁর চিন্তার জগৎকে আরো বিস্তৃত করে তোলে। রামমোহন ছিলেন এক ব্যতিক্রমী জ্ঞানসন্ধানী, যিনি প্রাচ্য ও পাশ্চাত্য—উভয় জগতের জ্ঞান একত্র করে একটি যুক্তিনির্ভর সমাজ নির্মাণের স্বপ্ন দেখেছিলেন।
২. ধর্মীয় চিন্তাধারা ও ব্রাহ্ম সমাজের প্রতিষ্ঠা
রামমোহন রায় ছিলেন একজন যুক্তিবাদী চিন্তাবিদ, যিনি ধর্মকে ভাবতেন মানুষের নৈতিক উন্নতির মাধ্যম হিসেবে। তিনি একেশ্বরবাদে বিশ্বাসী ছিলেন এবং হিন্দু ধর্মের বহুদেবতা পূজার বিরুদ্ধে সরব হন। তাঁর মতে, হিন্দুধর্মের মূল ভিত্তি ছিল বেদ ও উপনিষদ, যেখানে একমাত্র সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের কথা বলা হয়েছে, বহু দেবতার নয়। তিনি বলেন, উপনিষদে ‘একং সদ্বিপ্রা বহুধা বদন্তি’ অর্থাৎ "সত্য একটাই, জ্ঞানীরা তাকে বিভিন্ন নামে ডাকে" — এই চিন্তাই প্রকৃত ধর্মের ভিত্তি হওয়া উচিত।
হিন্দু ধর্মের বিভিন্ন রীতিনীতিকে (যেমন: পৌরাণিক দেবতা পূজা, বর্ণভেদ প্রথা, ব্রাহ্মণের আধিপত্য) তিনি কুসংস্কার ও অমানবিক বলেই মনে করতেন। তাঁর দৃষ্টিতে ঈশ্বরচিন্তা হতে হবে যুক্তিনির্ভর, নৈতিকতাসম্পন্ন এবং ব্যক্তিগত অনুভবের বিষয়—কোনো ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের কর্তৃত্ব নয়।
এই ভাবনা থেকেই তিনি ১৮২৮ সালে প্রতিষ্ঠা করেন "ব্রাহ্ম সমাজ"। এটি ছিল এক বিপ্লবাত্মক পদক্ষেপ, যা প্রথমবারের মতো ভারতের মাটিতে একটি আধুনিক, যুক্তিনির্ভর, একেশ্বরবাদী ধর্মীয় সংগঠন গঠনের সূচনা করেছিল।
ব্রাহ্ম সমাজের মূল উদ্দেশ্য ছিলঃ
একেশ্বরবাদ প্রচার করা
মূর্তিপূজার বিরোধিতা
ধর্মীয় কুসংস্কার দূর করা
সমস্ত ধর্মের মধ্যে নৈতিক ঐক্য খোঁজা
যুক্তি ও নৈতিকতার ভিত্তিতে ধর্মীয় চিন্তা প্রতিষ্ঠা করা
রামমোহন রায় বলতেন, সত্য কোনো একটি ধর্মের একচেটিয়া সম্পদ নয়—সত্য সর্বত্রই আছে। তিনি খ্রিস্টধর্ম ও ইসলাম ধর্মকেও গবেষণা করেছিলেন, এবং অনেক ক্ষেত্রে প্রশংসাও করেছিলেন, বিশেষ করে তাদের একেশ্বরবাদী দিকগুলিকে। কিন্তু তিনি অন্ধ বিশ্বাস বা ধর্মীয় গোঁড়ামিকে কোনোভাবেই প্রশ্রয় দেননি।
ব্রাহ্ম সমাজ তার মৃত্যুর পর দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর ও কেশবচন্দ্র সেনের হাত ধরে আরও সংগঠিত হয়, কিন্তু এর বীজ বপন করেছিলেন রামমোহন রায়-ই।
৩. সতীদাহ প্রথা ও নারীর অধিকার রক্ষার সংগ্রাম
রাজা রামমোহন রায়ের জীবনের সবচেয়ে সাহসী ও বিপ্লবাত্মক কাজগুলোর মধ্যে অন্যতম ছিল সতীদাহ প্রথার বিরুদ্ধে আন্দোলন। সতীদাহ ছিল এমন একটি নির্মম প্রথা, যেখানে কোনো নারীর স্বামী মারা গেলে, তাকে জ্যান্ত পুড়িয়ে মারা হতো চিতার আগুনে। সমাজের তথাকথিত ধর্মীয় নেতারা একে ধর্মীয় কর্তব্য বলে প্রচার করতেন।
রামমোহন রায় এই প্রথাকে বর্বর, অমানবিক ও অসভ্য বলে মনে করতেন। তিনি বলেছিলেন, কোনো ধর্ম যদি একজন নারীকে তার স্বামীর সঙ্গে পুড়িয়ে মারার নির্দেশ দেয়, তাহলে সেই ধর্ম মানবতাবিরোধী। তিনি যুক্তি, ধর্মগ্রন্থ ও মানবাধিকারের দৃষ্টিকোণ থেকে এই প্রথার বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছিলেন।
তাঁর সংগ্রামের পদ্ধতিঃ
তিনি হিন্দু ধর্মগ্রন্থ থেকে যুক্তি তুলে ধরেন যে, সতীদাহ কোনো বাধ্যতামূলক কর্তব্য নয়। বরং কিছু পুরাণে স্বামীর মৃত্যুর পর স্ত্রীকে জীবিত থেকে সন্তানদের পালন করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
তিনি সংবাদপত্র ও পুস্তিকা প্রকাশ করে সমাজের মধ্যে সচেতনতা তৈরি করেন।
ব্রিটিশ প্রশাসনের কাছে আবেদন করেন এই প্রথা নিষিদ্ধ করার জন্য।
ফলাফলঃ
১৮২৯ সালে, গভর্নর জেনারেল লর্ড উইলিয়াম বেন্টিঙ্ক সতীদাহ প্রথাকে আইনত নিষিদ্ধ ঘোষণা করেন। এটাই ছিল ভারতীয় উপমহাদেশে প্রথম বড় ধরনের সামাজিক সংস্কারমূলক আইন, যা একটি ভারতীয় চিন্তাবিদের প্রচেষ্টায় সম্ভব হয়েছিল।
তবে এই কাজের জন্য রামমোহন রায়কে প্রবল বিরোধিতার সম্মুখীন হতে হয়। অনেক হিন্দু ধর্মগুরু, জমিদার ও সাধারণ মানুষ তাঁর বিরুদ্ধে দাঁড়ায়। তাঁকে ‘ধর্মদ্রোহী’ পর্যন্ত বলা হয়। কিন্তু তিনি কোনো চাপের কাছে নত হননি।
নারীর অধিকারের পক্ষে তাঁর অন্যান্য অবদানঃ
নারী শিক্ষার পক্ষে জোরালো মতামত দেন। তিনি বিশ্বাস করতেন, নারী শিক্ষিত হলে পরিবার ও সমাজ উন্নত হবে।
বাল্যবিবাহের বিরোধিতা করেন।
বিধবা বিবাহের পক্ষে কথা বলেন, যদিও তার আইন প্রণয়ন তার মৃত্যুর পরে ইশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের হাতে বাস্তবায়িত হয়।
রামমোহনের মতে, একটি সভ্য সমাজ গঠনের জন্য নারীদের প্রতি সম্মান, শিক্ষা ও স্বাধীনতা অপরিহার্য। এই ধারণা সে সময় ছিল চরম বিপ্লবাত্মক, কিন্তু তার দূরদর্শিতাই আজকের নারীর অধিকারের ভিত্তি স্থাপন করেছিল।
৪. সাংবাদিকতা ও প্রকাশনা: চিন্তার স্বাধীনতার জন্য কলমের লড়াই
রাজা রামমোহন রায় ছিলেন উপমহাদেশের অন্যতম প্রথম সক্রিয় সাংবাদিক। তিনি বুঝেছিলেন, সমাজ পরিবর্তনের জন্য শুধু বক্তৃতা বা আন্দোলন যথেষ্ট নয়; মানুষের চিন্তাজগতে আলো ছড়াতে হলে দরকার মুক্ত সংবাদমাধ্যম ও সচেতন পাঠকসমাজ।
তাঁর প্রতিষ্ঠিত পত্র-পত্রিকাসমূহঃ
১. সামবাদ কৌমুদী (Bengali, 1821)
এটি ছিল বাংলাভাষায় প্রকাশিত এক প্রগতিশীল পত্রিকা, যার লক্ষ্য ছিল সমাজ সংস্কার, যুক্তিবাদ, নারী অধিকার ও শিক্ষার প্রসার।
এই পত্রিকায় তিনি মূর্তিপূজা, ব্রাহ্মণতন্ত্র, সতীদাহ প্রথা, বর্ণভেদ প্রভৃতি কুসংস্কারের বিরুদ্ধে কলম ধরেন।
২. The Persian Mirror (ফারসি ভাষায় – মিরাত-উল-আখবার)
এই পত্রিকাটি ছিল মুসলিম ও ফারসি পাঠকদের জন্য, যেখানে তিনি ব্রিটিশ প্রশাসনের সমালোচনা করতেন এবং ন্যায়বিচার ও ধর্মীয় সহিষ্ণুতার কথা বলতেন।
৩. Brahmanical Magazine, The Bengali Gazette, এবং The Enquirer (English)
এই সব পত্র-পত্রিকায় তিনি পশ্চিমা দর্শন, যুক্তিবাদ এবং ধর্মনিরপেক্ষ চিন্তার প্রসার ঘটান।
তিনি ইংরেজি ভাষায় লেখা মাধ্যমে পাশ্চাত্য পাঠকদের সামনে ভারতীয় সমাজের বাস্তব চিত্র তুলে ধরেন।
সাংবাদিকতার মাধ্যমে তাঁর মূল বার্তাগুলি ছিলঃ
চিন্তার স্বাধীনতা ও মতপ্রকাশের অধিকার থাকা উচিত
ধর্মকে যুক্তির আলোকে দেখা উচিত
নারী ও শিশুর অধিকার রক্ষা করা দরকার
ব্রিটিশ প্রশাসনের অন্যায় নীতির সমালোচনা করা উচিত
চ্যালেঞ্জ ও বাধা:
রামমোহনের সাংবাদিকতা ছিল ব্রিটিশ সরকারের চোখে বিপজ্জনক। তাঁর পত্রিকা "মিরাত-উল-আখবার" সরকারবিরোধী লেখা প্রকাশ করার কারণে বন্ধ করে দেওয়া হয়। পরবর্তীতে তিনি প্রকাশনা নিয়ে স্বাধীন মতপ্রকাশের অধিকারের জন্য আন্দোলন শুরু করেন। বলা যায়, ভারতীয় উপমহাদেশে প্রেসের স্বাধীনতার প্রথম দাবিদার ছিলেন রামমোহন রায়।
৫. পশ্চিমা দর্শনের প্রভাব ও যুক্তিবাদী দৃষ্টিভঙ্গি
রাজা রামমোহন রায় ছিলেন এমন একজন চিন্তাবিদ, যিনি প্রাচ্য ও পাশ্চাত্যের মধ্যে একটি সেতুবন্ধন তৈরি করতে চেয়েছিলেন। তিনি বিশ্বাস করতেন, পূর্বের আধ্যাত্মিকতা ও নৈতিকতা এবং পাশ্চাত্যের বিজ্ঞান ও যুক্তিবাদ—এই দুই ধারার সমন্বয়েই গড়ে উঠতে পারে একটি উন্নত ও মানবিক সমাজ।
পশ্চিমা দর্শনের প্রতি তাঁর আগ্রহের কিছু দিকঃ
তিনি ইংরেজি, গ্রিক, হিব্রু ও ল্যাটিন ভাষা শেখেন, যাতে পাশ্চাত্য দর্শন, বিজ্ঞান ও ধর্মীয় গ্রন্থ পাঠ করতে পারেন।
তিনি জার্মান দার্শনিক ইমানুয়েল কান্ট, স্কটিশ যুক্তিবাদী দার্শনিক ডেভিড হিউম, জেরেমি বেন্টহ্যামের উপযোগবাদ (Utilitarianism) প্রভৃতি ধারণা সম্পর্কে জানতেন।
খ্রিস্টধর্মের বাইবেল পড়ে তিনি উপলব্ধি করেন, খ্রিস্টধর্মেও একেশ্বরবাদের ওপর গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে, এবং অনেক মানবিক মূল্যবোধ প্রচারিত হয়েছে—যা হিন্দু ধর্মের উপনিষদের সঙ্গে মিল রাখে।
তাঁর যুক্তিবাদী দর্শনঃ
তিনি ধর্মীয় বিশ্বাস ও রীতিনীতি যাচাই করার জন্য যুক্তির ব্যবহারকে অত্যাবশ্যক মনে করতেন।
তিনি বলতেন: “যা কিছু মানবমনের স্বাভাবিক যুক্তির পরিপন্থী, তা কখনোই ঈশ্বরপ্রদত্ত হতে পারে না।”
তিনি সমাজের প্রচলিত বিশ্বাসের অন্ধ অনুসরণের বিরোধিতা করেন। তার মতে, “অন্ধ বিশ্বাস মানে নিজের চেতনাকে হত্যা করা”।
তিনি আধুনিক শিক্ষার মাধ্যমে একটি সচেতন, যুক্তিবাদী ও মানবিক সমাজ গড়ে তোলার স্বপ্ন দেখতেন। এই কারণে তিনি ইংরেজি শিক্ষার পক্ষে ছিলেন, যদিও সে সময় অনেকেই ইংরেজি শিক্ষাকে জাতীয়তাবিরোধী মনে করতেন।
সমন্বয়বাদী দৃষ্টিভঙ্গি:
রামমোহন রায় বিশ্বাস করতেন, ভারতীয় সংস্কৃতি ও ধর্মকে পাশ্চাত্যের যুক্তিবাদ ও বিজ্ঞানের আলোয় বিশ্লেষণ করলে তা আরও সমৃদ্ধ হবে। এই দৃষ্টিভঙ্গির কারণেই তিনি একদিকে যেমন উপনিষদ অনুবাদ করেন, অন্যদিকে তেমনই পাশ্চাত্যের দার্শনিক গ্রন্থ পাঠ করেন।
৬. শেষ জীবন, মৃত্যু ও উত্তরাধিকার
রাজা রামমোহন রায় জীবনের শেষ পর্যায়ে ভারতের বাইরে গিয়েছিলেন—ইংল্যান্ডে। তাঁর লক্ষ্য ছিল ব্রিটিশ সরকারের কাছে ভারতীয়দের অধিকারের কথা তুলে ধরা, বিশেষ করে মুঘল সম্রাট দ্বিতীয় আকবর শাহের পেনশন ও মর্যাদা রক্ষা। তিনি সম্রাটের বিশেষ দূত হিসেবে ১৮৩১ সালে ইংল্যান্ডে যান।
ইংল্যান্ডে তাঁর কার্যকলাপঃ
তিনি লর্ডদের সভায় বক্তৃতা দিয়ে ভারতের সামাজিক অবস্থা, করনীতি, ও শিক্ষা ব্যবস্থার সংস্কারের দাবি তোলেন।
ইংরেজদের কাছে ভারতের জন্য বিচারব্যবস্থায় ন্যায়, ধর্মীয় সহনশীলতা ও শিক্ষার বিস্তার চেয়েছিলেন।
ইংল্যান্ডে অবস্থানকালে তাঁর চিন্তা ও ব্যক্তিত্ব এতটাই প্রভাব ফেলে যে তাকে অনেক ইংরেজ পত্রিকায় “East's Greatest Man” বলা হয়।
মৃত্যুঃ
১৮৩৩ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর, ব্রিস্টলে কলেরা রোগে আক্রান্ত হয়ে তিনি মারা যান।
তাঁকে স্ট্যাপলটন গ্রোভে সমাধিস্থ করা হয়, পরে তাঁর দেহাবশেষ স্থানান্তর করে আরনোস ভেল কবরস্থানে (Arnos Vale Cemetery) পূর্ণ মর্যাদায় কবর দেওয়া হয়।
উত্তরাধিকারঃ
রাজা রামমোহন রায়ের চিন্তাধারা শুধু ব্রাহ্ম সমাজেই সীমাবদ্ধ ছিল না, বরং গোটা ভারতীয় জাতীয়তাবাদের এক ভিত্তি গড়ে তোলে।
ইশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর, কেশবচন্দ্র সেন, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরসহ অনেক সংস্কারক তাঁর পথ অনুসরণ করেন।
তাঁর চিন্তাই ভারতে যুক্তিবাদী ও মানবতাবাদী আন্দোলনের সূচনা করে, যা পরবর্তীকালে ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামেও প্রভাব ফেলেছিল।
তিনি ভারতকে শিখিয়েছিলেন—“ধর্মকে ভালোবাসো, কিন্তু অন্ধভাবে নয়; সমাজকে পাল্টাও, কিন্তু যুক্তির আলোয়।”